Skip to main content

জহুরুল ইসলাম - বিশিষ্ট ব্যবসায়ী

জহুরুল ইসলাম বাংলাদেশের ব্যবসা এবং শিল্পের ধারণা পুনরায় সংজ্ঞায়িত করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশী ব্যবসা খাতের অধিপতি ছিলেন।ইতিহাসের পাতায় নিঃসন্দেহে তিনি বাংলাদেশের ব্যবসার জনক হিসেবে পরিচিত।
ব্যবসা তার রক্তে মিশে ছিল যেহেতু তিনি একটি বনিয়াদি ব্যবসায়িক পরিবারে বংশোভূত ছিলেন।জহুরুল ইসলাম ১৯৬৪ সালে তার কোম্পানি 'ইসলাম গ্রুপ' এর মাধ্যমে ব্যবসা খাতে প্রবেশ করেন। তারপর থেকে ইসলাম গ্রুপ প্রকৌশল, নির্মাণ, ট্রেডিং এবং এমনকি পাদন সহ বহুমাত্রিক বিভাগে বিস্তার লাভ করে।কোম্পানিটি ওষুধ, বস্ত্র, পাট, বিমান, সিরামিক, মিডিয়া, রিয়েল এস্টেট, অর্থ, নির্মাণ এমনকি অত্যাবশ্যকীয় শক্তি খাতেও মনোনিবেশ করে।
জহুরুল  ইসলাম  তার নানারকম চিন্তার মাধ্যমে তিনি  বৈচিত্র্যপূর্ণ চিন্তার সামর্থ্য দেখিয়েছেন যা  তার প্রজন্মের কারও ছিলনা।তার অনন্য চিন্তা ধারা এবং নেতৃত্বের ফলসরূপ ইসলাম গ্রুপ বাংলাদেশের  শীর্ষস্থানীয় শিল্প প্রতিষ্ঠানে পরিনত হয়।

অধ্যবসায় মানুষের সর্বশ্রেষ্ঠ গুণাবলীর একটি; জহুরুল ইসলামের এই গুনটি ছিল।এটা স্বাভাবিকভাবেই তাকে একজন  মহান ব্যবসায়ী এবং নেতা হিসেবে পরিনত করেতিনি তিন দশক তার প্রতিষ্ঠান চালনাকালীন সময়ে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হন।তবে তার ধৈর্য এবং তার প্রতিভা একসঙ্গে ইসলাম গ্রুপকে দেশের এক নম্বর প্রতিষ্ঠানে পরিনত করে।

ভাল ব্যবসায়ী ছাড়াও, তিনি একজন ভাল মানুষ ছিলেনতিনি দেশের উন্নয়নে জন্য  জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রতিষ্ঠা করেছিলেনপ্রতিষ্ঠানটি আনুষ্ঠানিকভাবে ১৯৯২  সালে যাত্রা শুরু করলেও,১৯৮৯ সাল থেকেই হাসপাতালটি সেবা দান শুরু করেছিল।এর বিপুল সংখ্যক রোগী ধারন ক্ষমতা ছিল,জরুরী এবং সাধারন উভয় ক্ষেত্রে ৫০০ টির অধিক শয্যার ব্যবস্থা ছিল, কোন রোগীকেই ফিরিয়ে দেয়া হত না।এর প্রতিষ্ঠার পর থেকেই আধুনিক এবং নিবিড় সেবা প্রদান করা হত।এছারাও প্রতি বছর প্রায় ৩০ জন ছাত্র ভর্তির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি বৈদেশিক খ্যাতি অর্জন করে।

জহুরুল ইসলামের মানবহিতৈষী মনোভাব প্রকাশ পেত প্রতিষ্ঠানটির কাজের পরিবেশের মাধ্যমে,যেহেতু এটি এর কর্মকর্তাদের উত্তম কাজের পরিবেশ প্রদান করতো।ইসলাম গ্রুপ এবং এর অংগপ্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কর্মকর্তাদের কিছু বিরল সুযোগ সুবিধা দিত যা অন্যকোন বেসরকারি প্রতিষ্ঠান দিত না যেমন চিকিৎসা সুবিধা, পেনশন ভাতা, দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ, চাকরির প্রশিক্ষণ  ইত্যাদি

যদিও জহুরুল ইসলামের মৃত্যুর পর প্রতিষ্ঠানটি এখন তিনটি ভিন্ন ভাগে ভাগ  হয়েছে -ইসলাম গ্রুপ, নাভানা এবং আফতাব গ্রুপ; তিনটি প্রতিষ্ঠানই দেশের শীর্ষ প্রতিষ্ঠানের অন্তর্ভূক্ত। তিনটি গ্রুপ এখনও মহান জহুরুল ইসলামের রেখে যাওয়া দর্শন,নীতি,আত্মোসর্গ অনুসরণ করে।

শুধু ব্যবসায়ী হিসেবে নয় মানুষ হিসেবেও জহুরুল ইসলাম প্রজন্মের কাছে অনুসরনের এক প্রতিমূর্তি।তিনি ভবিষ্যত প্রজন্মের উদ্যোক্তাদের প্রণোদিত করতে জীবন ইতিহাসের বিশাল অনুপ্রেরণা রেখে গেছেন

তার বিচিত্র মানসিকতা তাকে বিরল সাফল্যকারী করেছেন।বাজার ভিত্তিক অর্থনীতিতে  একজন ব্যবসায়ী হিসেবে  তার ক্ষমতা তাকে একজন মহান নেতা বানিয়েছে।সামগ্রিকভাবে বিশ্ব সম্পর্কে চিন্তা, দেশের উন্নয়নে অবদান তাকে একরকম দার্শনিকে পরিণত করেছে। তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী  ছিল হৃদয়গ্রাহীতাঁর দার্শনিক চিন্তাধারা ছিল ব্যতিক্রমী; এবং উভয়ের সমন্বয় তাকে একটি সফল মানুষ করে তোলে।তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা খাতকে উচ্চস্তরে নিয়ে গিয়েছিলেন।


জহুরুল ইসলাম ছিলেন বাংলাদেশের ব্যবসা খাতের অধিপতি। তিনি অন্যদের সাথে মিলে ব্যবসা খাতকে গতি দিয়েছেন যা আজকের দিনে দরকার ছিল।

Comments

Popular posts from this blog

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal in the picture. Probably it was taken during a parliament session in the 1980s. 

শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানি

বাংলাদেশের বেসরকারি কোম্পানি বা কর্পোরেট হাউস গুলো দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পণ্য উৎপাদন বাড়ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে, ভোক্তা শ্রেণী বাড়ছে। এখানে শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানির কথা উল্লেখ করা হলোঃ স্কয়ার গ্রুপ স্কয়ার গ্রুপ আজ একটি  সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানের নাম। এটিই দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। কিন্তু এর যাত্রা ১৯৫৮ সালে কঠিন পরিস্থিতিতে হয়েছিল। নাম।স্কয়ার গ্রুপ আজ  শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের নাম নয় এটি একটি সংঘঠন যা গত চার দশকেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পে শক্তিশালী নেতৃত্বের অবস্থানে অধিষ্ঠিত এবং বিশ্ব ঔষধ শিল্পেও এখন এটি একটি সুপরিচিত বর্তমানে স্কয়ার প্রসাধন, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য পণ্য, খাদ্যসামগ্রী, হাসপাতালসহ প্রায় সবখাতেই বিস্তৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় ব্যবসা উন্নয়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধানে অবদান রাখছে এই কোম্পানি।স্কয়ার গ্রপের গড় বার্ষিক টার্নওভার ২০০মার্কিন  ডলার। স্কয়ার গ্রুপের প্

Rangauti Resort, Moulobhibazar in Sylhet

Picture credit: Tanzeena Meher & Syed Fazlul Karim Mujahid