Skip to main content

রাজনীতি ও ধর্ম : সংযোগস্থলে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ। দেশটির আভ্যন্তরীণ অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও রাজনীতিতে ইসলামের অনুপ্রবেশ দেশটিকে সমূলে গ্রাস করেছে। এই অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির বর্তমান অবস্থাটিকে সংগায়ন করতে হলে বলতে হবে যে, এটি হচ্ছে ধর্ম নিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী দল ও ইসলামপন্থী দলগুলোর মধ্যকার সংঘর্ষ । হেফাজতে ইসলাম নামে একটি নতুন ইসলামিক শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে। এর বিপরীতে আবির্ভুত হয়েছে শাহাবাগ আন্দোলন নামে আন্দোলনকারী গণজাগরন মঞ্চের। যদিও তারা বেশি দুর আগাতে পারেনি।

সামাজিক ও রাজনৈতিকভাবে বাংলাদেশ এমন একটি দেশ যেখানে বহু বছর আগে থেকেই ইসলাম চর্চা হয়ে আসছে। তৃণমূল পর্যায় থেকে শুরু করে এ দেশের প্রতিটি পর্যায়ের মানুষই ইসলামের শিক্ষাকে ধারন করে আসছে। দেশের প্রধান দুই দল, আওয়ামী লীগ ও বিএনপি তাই প্রকাশ্যেই ইসলামের প্রতি তাদের গভীর অনুরাগের কথা জনসম্মুখে বলে থাকে। বিএনপি, জামায়েত ইসলাম নামক শীর্ষস্থানীয় এক দলের সাথে জোট বেঁধেছে। হেফাজতে ইসলামকেও রাজনীতিতে আসার সুযোগ দেয়া হয়েছে। এর ফলে ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলগুলো বাস্তবের চেয়েও বেশি শক্তিধর হয়ে উঠেছে। তাই জাতীয় নির্বাচন যতই কাছে আসছে, এই দলগুলোর মধ্যকার রাজনৈতিক অস্থিরতা ততই বেড়ে যাচ্ছে।

১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশে ধর্ম নিরপেক্ষ সংবিধান তৈরি করা হয়। যাতে ধর্মীয় সহিংসতা, ধর্মভিত্তিক রাজনীতি, রাজনীতির উদ্দেশে ধর্মের অবমাননা ইত্যাদি অনাকাঙ্খিত ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়। মেজর জিয়াউর রহমান এবং মেজর এইচএম এরশাদের সেনা-শাসনব্যবস্থার সময় ধর্মনিরপেক্ষ সংবিধান দূর্বল হতে থাকে এবং ইসলামিক দল আর মহান মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের সহযোগীরা বাংলাদেশের কেন্দ্রিয় রাজনীতির কাছে আসতে থাকে। বিএনপিসহ অন্যান্য প্রধান রজনৈতিক দলগুলো যদিও বলে থাকে যে ইসলামিক দলগুলোর সাথে তারা কৌশলগতভাবে জোট তৈরি করেছে কিন্তু তাদের সহযোগীতা ইসলামপন্থী এবং এই অযাচিত দলগুলোকে বর্তমানে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরিতে সহায়তা করেছে। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের মানুষকে অসন্তুষ্টির চরম সীমায় নিয়ে গেছে। এই দুই দল জাতির স্বার্থে নয় বরং নিজ নিজ দলগত স্বার্থে সংসদকে ব্যবহার করে আসছে। তাই বিকল্প হিসেবে দেশের তরুণ সমাজের উল্লেখযোগ্য একটি অংশ ইসলামপন্থী দলগুলোকে সমর্থন করছে। ইসলামপন্থী নেতারা সবসময়ই বলে আসছেন যে তাদের দল দেশের প্রধান দুই দলগুলো থেকে আলাদা। কিন্তু প্রকৃতপক্ষে বিএনপি ছাড়া বাংলাদেশের রাজনীতিতে তাদের ক্ষমতা অতি অল্প।

বিএনপির পাঁচ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে জয় লাভের ঘটনাটি রাজনীতির মাঠের একটি সাধারণ ঘটনা ছিল। আসলে এটিকে বাংলাদেশের রাজনীতির আরেকটি উত্থান-পতনের প্রভাব হিসেবে দেখা যায়।কিন্তু বাংলাদেশের রাজনীতির স্থিতিশীল অবস্থা প্রাপ্তি প্রায় অসম্ভব। চরম উত্তেজনাপূর্ণ একটি অবস্থার মধ্য দিয়ে নতুন ইসলামিক শক্তি হিসেবে বাংলাদেশে হেফাজতে ইসলামের উদ্ভব ঘটেছিল। ইতিহাসবিদ এবং রাজনীতি বিশ্লেষক মুনতাসির মামুনের মতে বাংলাদেশের রাজনীতিতে একটি নতুন সমীকরণ দেখা যাচ্ছে আর সেটি হল, হে-জা-বি অর্থাত হেফাজত-জামায়াত-বিএনপি। এই শক্তি যদি বাংলদেশের রাজনীতিতে শক্তিশালী হয়ে উঠে তবে দেশের ধর্ম ও রাজনীতিতে সহিংসতা ছড়িয়ে পরার আশংকা রয়েছে।

ইসলামপন্থীরা রাজনৈতিক দিক থেকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তাদের অবস্থানকে দৃঢ় করেছে। তিউনেসিয়া, তুরষ্ক, মিশর এর মধ্যে অন্যতম। বাংলাদেশও ওই পথেই হাঁটছে। ইলিনয়িস স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি ও সরকার বিভাগের চেয়ারম্যান আলি রিয়াজের মতে, বাংলাদেশে ইসলামিক চিন্তাধারা ও ইসলামিক দলগুলোর উন্নতি সাধনের পিছনে মূলত দুইটি কারণ রয়েছে। প্রথমত, সরকার ব্যবস্থায় থাকা দলের প্রভাব বিস্তার করতে না পারা এবং দ্বিতীয়ত, ধর্ম নিরপেক্ষ দলগুলোর উদ্দেশ্যপ্রবণ রাজনীতি। এই কারণ দুটিই মূলত বাংলাদেশে ইসলামপন্থি দলগুলোর ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য দায়ী। অনেক বাংলাদেশীই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট এই দেশে ইসলাম পরিপন্থি করার চেষ্টায় রত রয়েছেন। এর জন্য অনেকেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। দেশের রাজনীতির এই অবস্থাটি ধর্ম নিরপেক্ষ যে কোন দলের জন্য বিপদের কারণ হতে পারে।

Comments

Popular posts from this blog

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal in the picture. Probably it was taken during a parliament session in the 1980s. 

History of Bangladesh's banking sector

The formally known ‘State Bank of Pakistan’ was renamed as ‘Bangladesh Bank’ right after Bangladesh’s independence. The Bangladesh Bank automatically became official foreign exchange reserve institute. It was too accountable for currency control, monitoring exchange and credit control. In the early 1970s, the government decided to permit foreign banks to continue their business and nationalize the local banks. In that very decade of 1970s, the primary concern of the government was to develop the country’s agricultural industry . This resulted in the Krishi Bank extending loans to more farmers. In the later decades, however, the county’s focus shifted to industrialization; resulting in various difficulties in the economic growth process. Lack of proper private activity guidelines and proper methods on loan giving were more significant of these problems. It was not until the late 1980s that these difficulties were being overcome and compensated for the agro sector. However the fin

শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানি

বাংলাদেশের বেসরকারি কোম্পানি বা কর্পোরেট হাউস গুলো দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পণ্য উৎপাদন বাড়ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে, ভোক্তা শ্রেণী বাড়ছে। এখানে শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানির কথা উল্লেখ করা হলোঃ স্কয়ার গ্রুপ স্কয়ার গ্রুপ আজ একটি  সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানের নাম। এটিই দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। কিন্তু এর যাত্রা ১৯৫৮ সালে কঠিন পরিস্থিতিতে হয়েছিল। নাম।স্কয়ার গ্রুপ আজ  শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের নাম নয় এটি একটি সংঘঠন যা গত চার দশকেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পে শক্তিশালী নেতৃত্বের অবস্থানে অধিষ্ঠিত এবং বিশ্ব ঔষধ শিল্পেও এখন এটি একটি সুপরিচিত বর্তমানে স্কয়ার প্রসাধন, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য পণ্য, খাদ্যসামগ্রী, হাসপাতালসহ প্রায় সবখাতেই বিস্তৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় ব্যবসা উন্নয়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধানে অবদান রাখছে এই কোম্পানি।স্কয়ার গ্রপের গড় বার্ষিক টার্নওভার ২০০মার্কিন  ডলার। স্কয়ার গ্রুপের প্