নিম্ন আয়ের
দেশগুলোকে ছাড়িয়েছে তো অনেক আগে। অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক বেশির ভাগ সূচকে বাংলাদেশ
ইদানিং ছাড়িয়ে গেছে দক্ষিণ এশিয়াকে। বিশ্বব্যাংক বলেছে প্রধান ১২টি সূচকের মধ্যে
১০টিতেই বাংলাদেশ দক্ষিণ এশিয়া এবং অন্য নিম্ন আয়ের দেশের তুলনায় এগিয়ে গেছে বা
যাচ্ছে। আর আইএমএফ এর মতে, একটি জনবহুল ও
নিম্ন আয়ের দেশ হিসেবে বাংলাদেশ যেভাবে প্রবৃদ্ধির সঙ্গে দারিদ্র্য কমানোকে
সংযুক্ত করেছে, তা অত্যন্ত
উল্লেখযোগ্য। একই সাথে বাংলাদেশের প্রাইভেট সেক্টর এগিয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত।
বেক্সিমকো গ্রুপের মতন প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের অর্থনীতি ও আর্থসামাজিক অঙ্গনে অবদান
রাখছে।
গত দুই দশকের
অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক উন্নয়নের যেকোনো সূচকের বিচারে বাংলাদেশের
অভূতপূর্ব অগ্রগতি হয়েছে। বাংলাদেশ ১৯৯০-এর পর সার্বিকভাবে প্রবৃদ্ধিতে উন্নয়নশীল
দেশের গড় হারের তুলনায় অনেক এগিয়েছে। দারিদ্র্যের হার অর্ধেক হয়ে গেছে। মেয়েদের
অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অবদানের হার দ্রুত বেড়েছে, জনসংখ্যা, গড় আয়ু, শিশুমৃত্যুর হার, মেয়েদের স্কুলে পড়ার হার, সক্ষম দম্পতিদের জন্মনিয়ন্ত্রণব্যবস্থা গ্রহণের
হার ইত্যাদি সামাজিক সূচকে বাংলাদেশ সমপর্যায়ের উন্নয়নশীল অন্যান্য দেশ, এমনকি প্রতিবেশী ভারতকে পেছনে ফেলতে সমর্থ
হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের তৈরি করা তথ্য-উপাত্ত অনুযায়ী, নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এখন গড় মাথাপিছু আয় হচ্ছে
৫২৮ ডলার। আর দক্ষিণ এশিয়ার গড় আয় এক হাজার ১৭৬ ডলার। এক হাজার ৪৪ ডলার নিয়ে
দক্ষিণ এশিয়াকে প্রায় ধরে ফেলেছে বাংলাদেশ। সাফল্য আছে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হারেও।
বাংলাদেশে এখন এই হার মাত্র ১ দশমিক ৩ শতাংশ আর দক্ষিণ এশিয়ার গড় ১ দশমিক ৪ শতাংশ।
নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে এই গড় অনেক বেশি, ২ দশমিক ১ শতাংশ। এর পেছনে কাজ করেছে জনগণের উন্নয়ন-সচেতনতা, গোত্র-বর্ণ ভেদাভেদহীন সমাজ এবং
সরকারি-বেসরকারি সংস্থাগুলোর নানা কার্যকর কর্মসূচি ও সামাজিক উদ্যোগ।
১৯৯০ এর দশকেও
বাংলাদেশে ৫৭ শতাংশ মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করত। এখন করছে ৩১ দশমিক ৫
শতাংশ। বিশ্বব্যাংক ও আইএমএফ বলছে, ৬ শতাংশ হারে
অব্যাহত প্রবৃদ্ধি অর্জন গ্রামীণ অর্থনীতিকে চাঙা করেছে। মূলত ৮০ লাখ প্রবাসীর
পাঠানো আয়, তৈরি পোশাক খাতের
প্রায় ৪০ লাখ শ্রমিক এবং কৃষির সবুজ বিপ্লব বা এক জমিতে দুই ফসল দারিদ্র্য কমানোর
ক্ষেত্রে বড় ধরনের ভূমিকা রেখেছে। আবার সরকারও পিছিয়ে পড়া ও অতিদরিদ্রদের জন্য
সামাজিক কর্মসূচি খাতে অব্যাহতভাবে বাজেট বাড়িয়েছে। দেশের ৪০ শতাংশ অতি দরিদ্র
মানুষ এখন এই কর্মসূচির আওতায়। এ খাতে সরকার মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) অংশ
হিসেবে যে অর্থ ব্যয় করছে, তা বড় অর্থনীতির
দেশ ভারতের সমপর্যায়ের। নেপাল, পাকিস্তান ও
শ্রীলঙ্কা এর চেয়ে অনেক কম অর্থ ব্যয় করে।
সময় এখন বাংলাদেশের
এগিয়ে যাবার!
Comments
Post a Comment