দেশের ই-কমার্স খাত বেশ শক্ত একটা ভিত পেয়েছে। করোনা প্রাদুর্ভাবের সময়ে ই-কমার্স খাত এগিয়েছে কয়েকগুণ। তবে রাজধানীভিত্তিক ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ভালো করলেও ঢাকার বাইরের ই-কমার্সগুলোর অবস্থা ততটা ভালো নয় বলে মন্তব্য করেছেন এ খাতের সংশ্লিষ্টরা। আইসিটি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, গত ১০-১১ বছরে দেশের ই-কমার্স খাত যতটা এগিয়েছে তার চেয়ে বেশি এগিয়েছে গত পাঁচ মাসে।
এ খাতে বিশৃঙ্খলারও অভিযোগ রয়েছে। সময় মতো পণ্য না পাওয়া, অন্য পণ্য পাওয়া বা পণ্য একেবারে না পাওয়া, পণ্য না পেয়ে টাকা ফেরত না পাওয়ার মতো নানান অভিযোগও আছে ই-কমার্সগুলোর বিরুদ্ধে। শুধু নীতিমালার ওপর নির্ভর করে পরিচালিত হওয়ায় এ খাতের সমস্যাগুলো দূর হচ্ছে না। ই-কমার্স বিষয়ক কোনও আইন থাকলে এ খাত আরও এগিয়ে যেতো বলে মনে করেন খাত সংশ্লিষ্টরা।
দেশে ই-কমার্স পরিচালনার জন্য নীতিমালা রয়েছে ‘ডিজিটাল কমার্স নীতিমালা’ শিরোনামে। এই নীতিমালায় দেশে ই-কমার্স কীভাবে পরিচালিত হবে,বিদেশি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো কীভাবে এ দেশে ব্যবসায় করবে ইত্যাদি বিষয় তাতে উল্লেখ থাকলেও ই-কমার্স থেকে সেবা বা পণ্য কিনতে গিয়ে কোনও সমস্যা হলে, পণ্য সময় মতো ডেলিভারি না পেলে, যে পণ্য অর্ডার করা হয়েছিল তা না পেলে ক্রেতারা কোথায় যাবেন, অভিযোগ করে কীভাবে প্রতিকার পাবেন— তার কোনও উল্লেখ নেই। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ডিজিটাল কমার্স আইন থাকলে দেশের ই-কমার্স সঠিকভাবে পরিচালিত হবে, ক্রেতাদের ভোগান্তি লাঘব হবে। ক্রেতারা অন্তত অভিযোগ জানানোর বা প্রতিকার পাওয়ার একটা উপায় খুঁজে পাবেন।
জানা গেছে, দেশের ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর সংগঠন ই-ক্যাব (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) ক্রেতা ও বিক্রেতাদের ‘মধ্যবর্তী’ হয়ে সমঝোতার মাধ্যমে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করে। অন্যদিকে রয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। এখানে অভিযোগ করেও ক্রেতারা প্রতিকার চাইতে পারেন।
ই-কমার্স থেকে সেবা নিতে গিয়ে প্রতারিত হলে অভিযোগ জানানো যাবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরে। এই অধিদফতরে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। অধিদফতরের উপ-পরিচালক মাসুম আরেফিন জানান, সাধারণত তিন উপায়ে অভিযোগকারীদের সমাধান দেওয়া হয়। প্রথমত, দুই পক্ষকে আপস করতে বলা হয়। এই উদ্যোগে সমাধান হয় অনেক সময়। যদি অপরাধ প্রমাণ হয় তাহলে শাস্তির বিধান আছে। অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়। জরিমানার ২৫ শতাংশ অর্থ অভিযোগকারীকে দেওয়া হয়। আর যদি কোনও অপরাধ প্রমাণিত না হয় তাহলে অভিযোগ খারিজ করে দেওয়া হয়। কোনও ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য বা সেবা কিনে নির্দিষ্ট সময়ের (টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশন অনুযায়ী) মধ্যে না পাওয়া, প্রতিষ্ঠানকে বারবার তাগাদা দিয়েও তা না পেলে ৩০ দিনের মধ্যে অধিদফতরে অভিযোগ করা যাবে। ১৬১২১ নম্বরে ফোন করেও অভিযোগ করার সুযোগ রয়েছে।
Comments
Post a Comment