Skip to main content

ব্যাংক খাত সংস্কারে সহায়তার প্রস্তাব

 বাংলাদেশের আর্থিক খাতের সংস্কার চায় বিশ্বব্যাংক। ঢাকায় সফররত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার অর্থমন্ত্রীসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। সেখানে সংস্কারের বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংককে সহায়তা করার প্রস্তাব দেয় বিশ্বব্যাংক। জবাবে বাংলাদেশ ব্যাংক সাফ জানিয়ে দিয়েছে, ব্যাংক খাত সংস্কারে আপাতত সহায়তার প্রয়োজন নেই।

ঢাকায় সফররত বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার, ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান ও আবু ফরাহ মো. নাছেরসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এক বৈঠকে অংশ নেন। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা ডলার–সংকট ও রিজার্ভ পরিস্থিতি বিশ্বব্যাংকের সামনে তুলে ধরেন। তাঁরা বলেন, ডলারের দাম নির্ধারণ হচ্ছে চাহিদা ও জোগানের ভিত্তিতে। এটি বাজারের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। বাজারে ডলারের ঘাটতি থাকায় রিজার্ভ থেকে জোগান দেওয়া হচ্ছে। এর ফলে রিজার্ভ কমে আসছে। বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে আমদানি কমছে। তবে রপ্তানি ও প্রবাসী আয় বাড়ছে। ফলে ডলারের চাহিদা কমছে। সামনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে। বৈঠকে সুদহারের সীমা তুলে দেওয়া নিয়েও আলোচনা হয়।

বৈঠক শেষে মার্টিন রেইজার নিজের পেজে টুইট করেন। এতে তিনি বৈঠকটিকে ‘গ্রেট’ বলে আখ্যায়িত করেন। এ ছাড়া বৈঠকে টেকসই উন্নয়নের জন্য সংস্কারের তাগিদ দেন। তিনি টুইটে বলেন, ‘বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে বৈঠকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। বিশ্বব্যাংক ধারাবাহিকভাবে সহায়তা দিচ্ছে এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতার ৫০ বছর উদ্‌যাপন করছে।’

বিশ্বব্যাংককে বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, তারা আর্থিক খাতের উন্নতিতে বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে। আর্থিক সূচকে দুর্বল অবস্থায় থাকা ব্যাংকগুলোর সঙ্গে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করা শুরু করেছে। সংস্কার প্রয়োজন এমন ব্যাংকের তালিকায় আছে বেসরকারি খাতের ন্যাশনাল ব্যাংক লিমিটেড (এনবিএল), পদ্মা ব্যাংক (সাবেক ফারমার্স), বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, বিদেশি খাতের আইসিবি ইসলামিক ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক অব পাকিস্তান। তবে সম্প্রতি অনিয়ম ধরা পড়েছে, এমন ব্যাংকগুলোকে এই তালিকায় যুক্ত করা হয়নি।

রাজধানীর এক হোটেলে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সঙ্গেও বৈঠক করেছেন মার্টিন রেইজার। বৈঠকে বিভিন্ন প্রকল্পে বিশেষত করোনাকালে বাজেট সহায়তা প্রদান ও কোভিড টিকা কেনায় অর্থায়নের জন্য বিশ্বব্যাংককে ধন্যবাদ জানান অর্থমন্ত্রী। অন্যদিকে বাংলাদেশের প্রশংসা করে মার্টিন রেইজার বলেন, অগ্রগতির ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিশ্বের অনেক দেশের কাছে অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত। সভায় উভয় পক্ষের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

ঢাকায় এসে ওই দিন রাতেই রাজধানীর একটি হোটেলে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে নৈশভোজে যোগ দেন বিশ্বব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার। এ সময়ে তিনি বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্য আরও প্রতিযোগিতাসক্ষম করতে আর্থিক খাত সংস্কারের তাগিদ দেন। বৈঠক শেষে মার্টিন রেইজার টুইট করে বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের সঙ্গে নৈশভোজে অর্থনীতি নিয়ে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার বিষয়বস্তু হলো ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে কেমন চ্যালেঞ্জ সৃষ্টি হয়েছে এবং বাংলাদেশ কীভাবে মোকাবিলা করছে। এদেশে বেসরকারি খাতের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা বাড়াতে আর্থিক খাতে সংস্কার প্রয়োজন। এ ছাড়া সরকারি বেসরকারি অংশীদারত্ব (পিপিপি) ও আঞ্চলিক যোগাযোগ নিয়েও আলোচনা হয়েছে।’

এদিকে বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্টের সফর উপলক্ষে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে স্থানীয় এক হোটেলে মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করে এদেশে কার্যরত উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাগুলো। বিশ্বব্যাংকের ভাইস প্রেসিডেন্ট এমন এক সময়ে সফরে এসেছেন যখন ডলার–সংকটসহ অর্থনৈতিক চাপ মোকাবিলায় সংস্থাটির কাছে বাংলাদেশ ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বাজেট সহায়তা চেয়েছে। এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা চলছে। দেশে বর্তমানে ৫৫টি প্রকল্প বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে বাস্তবায়ন হচ্ছে। এতে প্রায় ১ হাজার ৫৬৯ কোটি ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক।

Comments

Popular posts from this blog

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal

Shaik Hasina, Salauddin Kader, Nizami and Tofayal in the picture. Probably it was taken during a parliament session in the 1980s. 

শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানি

বাংলাদেশের বেসরকারি কোম্পানি বা কর্পোরেট হাউস গুলো দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। পণ্য উৎপাদন বাড়ছে, কর্মসংস্থান হচ্ছে, ভোক্তা শ্রেণী বাড়ছে। এখানে শীর্ষস্থানীয় পাঁচ কোম্পানির কথা উল্লেখ করা হলোঃ স্কয়ার গ্রুপ স্কয়ার গ্রুপ আজ একটি  সুপরিচিত প্রতিষ্ঠানের নাম। এটিই দেশের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি। কিন্তু এর যাত্রা ১৯৫৮ সালে কঠিন পরিস্থিতিতে হয়েছিল। নাম।স্কয়ার গ্রুপ আজ  শুধু একটি প্রতিষ্ঠানের নাম নয় এটি একটি সংঘঠন যা গত চার দশকেরও বেশী সময় ধরে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে যাচ্ছে। এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ১৯৮৫ সাল থেকে বাংলাদেশের ঔষধ শিল্পে শক্তিশালী নেতৃত্বের অবস্থানে অধিষ্ঠিত এবং বিশ্ব ঔষধ শিল্পেও এখন এটি একটি সুপরিচিত বর্তমানে স্কয়ার প্রসাধন, গার্মেন্টস, টেক্সটাইল, তথ্য প্রযুক্তি, স্বাস্থ্য পণ্য, খাদ্যসামগ্রী, হাসপাতালসহ প্রায় সবখাতেই বিস্তৃতির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখছে। স্থানীয় ব্যবসা উন্নয়নের মাধ্যমে বেকার সমস্যা সমাধানে অবদান রাখছে এই কোম্পানি।স্কয়ার গ্রপের গড় বার্ষিক টার্নওভার ২০০মার্কিন  ডলার। স্কয়ার গ্রুপের প্

Rangauti Resort, Moulobhibazar in Sylhet

Picture credit: Tanzeena Meher & Syed Fazlul Karim Mujahid