প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু বিশ্বাস করতেন দেশকে এগিয়ে নিতে হলে বেসরকারি খাতকে প্রয়োজন। ঠিক সেসব ভিত্তির উপরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমবার ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে কাজ শুরু করলেন। বেসরকারি খাতের বেশকিছু কাজ প্রথম হয়েছে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। ১৯৯৬ সালে প্রথম বেসরকারি খাতে এয়ারলাইন্স লাইসেন্স দেয়া হয়। এ ছাড়া শেখ হাসিনার সময়ে পাওয়ার জেনারেশনে বেসরকারি খাতকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। তখন বেসরকারি খাতে টেলিভেশন ষ্টেশনের লাইসেন্সও দেয়া হয়। এ ছাড়া ব্যাংক ও ইন্সুরেন্সের বেসরকারি খাতে অনেকগুলো লাইসেন্স বর্তমান প্রধানমন্ত্রী প্রথম ক্ষমতায় এসে দিয়েছিলেন।
পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ধারাটি ৭০ দশকে বঙ্গবন্ধুর আমলেই শুরু হয়েছিল। বারডেম হসপিটালে সরকারি ও বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ রয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এডিবিতে পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপের ৭৭টি প্রজেক্ট তালিকাভুক্ত হয়েছে। ২০০৯ সালে দেশে সরকারি বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছিল ১৫ শতাংশ। একই সময়ে বেসরকারি বিনিয়োগ ছিল ৮৫ শতাংশ।
আমাদের দেশে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারীত্ব (পিপিপি) তে এক ধরনের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। বেসরকারি বিনোগকারীদের সরকার বিশ্বাস করতে পারে না, আবার বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা সরকারকে বিশ্বাস করতে পারে না। এ রকম যেসব অনাস্থা রয়েছে তা দূর করতে হবে। এ ছাড়া ইমোশনাল সিদ্ধান্ত থেকে আমাদের বের হতে হবে। কারণ আমরা পিপিপিতে অনেক বেশি সফল না। তবে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শেষ হলে আমাদের ঢাকার যানজট অনেক কমবে। এটা আমাদের একটি সাফল্য। এ রকম রেলসহ অনেক কিছু আমাদের দরকার। আমরা এসব কাজ পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপে করতে পারি।
দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে এবং টেকসই রাখতে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করে বেসরকারি খাতের সঙ্গে মিলে কাজ করতে হবে, মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তার মতে বর্তমান বৈশ্বিক প্রেক্ষাপট ও দেশের রিজার্ভ ও বাজেট সীমাবদ্ধতার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারীত্ব (পিপিপি) ছাড়া আমাদের উপায় নেই এবং প্রয়োজনে আইনে পরিবর্তন করা উচিত। দুটো সমস্যার কথাও তুলে ধরেন তিনি। বলেন, পিপিপি অথরিটির কাজ হলো প্রজেক্ট খোঁজা। প্রস্তাব আসার পর পিপিপি’র কাজ হলো সে অনুযায়ী কাজ করা। বিশেষ করে যতগুলো পিপিপি আসছে, যারা প্রস্তাব দিচ্ছে, তারা বলছে আমি যদি পাই এটা আমি করবো। যখন তারা কাজ পায়, তখন তারা ফাইন্যান্সিং খুঁজে বেড়াচ্ছে, ইনভেস্টর খুঁজে বেড়াচ্ছে। এটা একটা সমস্যা। দ্বিতীয় সমস্যা হচ্ছে টেকনোলজি। কাগজে-কলমে দেখা যায় তাদের সক্ষমতা আছে। কনট্রাক্ট দিয়ে দেয়ার পর দেখা যায়, তাদের সক্ষমতা নেই। এ ক্ষেত্রে ঋণ খেলাপিকে বড় সমস্যা হিসেবে তুলে ধরে তিনি বলেন, অন্যান্য দেশে সমাধান আছে। কেউ যদি খেলাপি করে, তাকে একটা এক্সিট দিতে হবে। কোম্পানিকে টেকওভার করে রি-স্ট্রাকচার করেন। যে শাস্তি পাবে, তাকে শাস্তি দেন। কিন্তু কোম্পানিটাকে রি-স্ট্রাকচার্ড করতে হবে। তিনি বলেন, খেলাপি দুই ধরনের। এক ইচ্ছাকৃত খেলাপি হয়। আরেকটা হলো আসলেই সে খেলাপি। এ জন্য আমরা ব্যাংকিং আইন পরিবর্তনের চেষ্টা করছি। তিনি বলেন, আমরা পিপিপি অথরিটির সঙ্গে বসবো। দেখি এই আইনে সবকিছু করা যায় কিনা। না হলে এই আইনও সংশোধন করবো।
Comments
Post a Comment