অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার কারণে মুঘল যুগে ঢাকায় উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা বৃদ্ধি হয়। তখন ঢাকা ছিল বাঙালি মুসলমান, হিন্দু, আর্মেনিয়ান এবং ইউরোপীয়সহ বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর বাসস্থান। এই জাতি বৈচিত্র্য ঢাকা শহরের সাংস্কৃতিক বুননকে সমৃদ্ধ করেছিল।
মুঘল আমলে ঢাকার স্থাপত্য ল্যান্ডস্কেপ মুঘল নন্দনতত্ত্ব দ্বারা ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হয়েছিল। শহরে ছিল রাজকীয় মসজিদ, অলঙ্কৃত প্রাসাদ এবং বিস্তীর্ণ বাগান। এসব মুঘল নকশার মহিমাকে প্রতিফলিত করেছিল। লালবাগ কেল্লা সেইসব অলঙ্কৃত প্রাসাদের একটি ।
লালবাগ কেল্লা ছাড়াও মুঘল আমলে আহসান মঞ্জিল এবং হুসাইনি দালান,যা শিয়া মুসলিম সম্প্রদায়ের জন্য একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র, তৈরি হয়েছিল। এই ভবনগুলো শুধু সেই সময়ের শৈল্পিক অর্জনকেই প্রতিনিধিত্ব করে না, ঢাকার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবেও দাঁড়িয়ে থাকে।
মুঘল আমলে বিভিন্ন পটভূমির লোকেরা সহাবস্থান করেছিল ঢাকায়। তারা শহরের গতিশীল পরিবেশে মানিয়ে নিয়েছিল । রাস্তাগুলি প্রাণবন্ত ছিল, যেখানে ব্যবসায়ী, কারিগর এবং শ্রমিকদের দেখা যেত। এসব শহরের অর্থনীতিতে অবদান রাখছিল। ধনী অভিজাত এবং শ্রমিক শ্রেণীর মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য ছিল অবশ্য।
ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো ঢাকার বাসিন্দাদের সামাজিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতো। উৎসব, যেমন ঈদ, দুর্গাপূজা এবং পৌষ মেলা,মানুষকে একত্রিত করে এবং সম্প্রদায়ের বোধ জাগিয়ে ব্যাপক উৎসাহের সাথে উদযাপিত হত। এই উৎসবগুলো সাংস্কৃতিক বিকাশের জন্যও আদর্শ ছিল, যেখানে সঙ্গীত, নৃত্য এবং খাবার কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতো।
Comments
Post a Comment