আগামী ছয় মাস দেশের অর্থনীতির জন্য জ্বালানি সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান। তবে এ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে সরকার পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ করছে বলেও জানান তিনি।রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) সম্মেলন কক্ষে মিট দ্য ওকাব অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন সালমান এফ রহমান। অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশী সাংবাদিকদের সংগঠন ওভারসিজ করেসপনডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ওকাব)। প্রধানমন্ত্রীর বিনিয়োগ উপদেষ্টা বলেন, রাশিয়ার কাছ থেকে জ্বালানি তেল কেনা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী ৫ সেপ্টেম্বর ভারতে যাচ্ছেন। এছাড়া শিগগিরই উচ্চ পর্যায়ের একটি প্রতিনিধি দল রাশিয়া যাবে। এসব আলোচনায় সমাধান আসবে বলে আশা করছি।
জ্বালানি সমস্যা সমাধানে সরকারি উদ্যোগের বিষয়ে তিনি বলেন, সারা বিশ্বে এলএনজির দাম বেড়েছে, তার প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। তবে দ্রুতই এলএনজির দাম কমে আসবে বলে আমরা আশা করি। সেটি না হলে সংকট আরো বাড়বে। এক্ষেত্রে বিদেশ থেকে এলএনজি আমদানি করে দেশের নিজস্ব গ্যাসের সঙ্গে যোগ করে ব্যবহার করা হবে। সালমান এফ রহমান আরো বলেন, আমাদের প্রায় ৭০-৮০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন হয় গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কারখানা থেকে। এলএনজির স্পট মূল্য এত বেশি বেড়ে গিয়েছে যে এ দামে কিনে পোষানো সম্ভব হচ্ছে না। সেজন্য গ্যাসের বিকল্প খোঁজার দিকে মনোযোগ দেয়া হচ্ছে। ভোলায় আমরা গ্যাসের সবচেয়ে বড় রিজার্ভ পেয়েছি। কিন্তু এ গ্যাসফিল্ডের সমস্যা হচ্ছে কানেক্টিভিটি নেই। এখন ভোলার গ্যাস কীভাবে মূল ভূখণ্ডে নিয়ে আসা যায় সে বিষয়ে সম্ভাব্যতা যাচাই করা হচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিভিন্ন দেশ থেকে তুলনামূলক কম দামে গ্যাস আমদানিতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান সালমান এফ রহমান। তিনি বলেন, কাতারের সঙ্গে যে চুক্তি আছে, সেটা স্পট প্রাইসের চেয়ে কিছু কম দামে দীর্ঘমেয়াদে করা যায় কিনা সে চেষ্টা করা হচ্ছে। অপরিশোধিত জ্বালানি তেল আমদানির প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, এ ধরনের জ্বালানি মূলত মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো থেকে আসে। ইস্টার্ন রিফাইনারিতে এসব তেল পরিশোধন করা হয়। সেখানে রাশিয়ান ক্রুড অয়েল ব্যবহার করা যায় না। রাশিয়া থেকে আমদানিতে বিরূপ প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে প্রধানমন্ত্রীর এ উপদেষ্টা বলেন, রাশিয়ার যে ২৪টি ব্যাংকের ওপর যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা দেয়নি, সেই ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে আমরা আমদানি করব। এতে কোনো সমস্যা হবে না। ডলারের ওপর চাপ কমানোর উপায় খোঁজা হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের রিজার্ভে যে বৈদেশিক মুদ্রা আছে সেগুলো ব্যবহারের জন্য কৌশল নেয়া হচ্ছে। বিকল্প মুদ্রার চিন্তা করতে হচ্ছে। কারণ আমাদের ৯৫ শতাংশ বাণিজ্যই আমাদের মার্কিন ডলারভিত্তিক। এছাড়া আমাদের ইউরো, আরএনবি বা ইন্ডিয়ান রুপি মজুদ থাকে। সে মজুদ ব্যবহারের জন্যই আমরা বিকল্প মুদ্রার চিন্তা করছি।
বৈশ্বিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশে বিনিয়োগ কমেছে কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বাংলাদেশে বিদেশী বিনিয়োগ মোটেও কমেনি। বরং এ দেশে বিনিয়োগে অনেকে আগ্রহ প্রকাশ করছে।
Comments
Post a Comment