আবুধাবিতে অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ-ইউএই ইকোনমিক কো-অপারেশন সেমিনারের পার্শ্ববৈঠকে খালিজ টাইমসে এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান বলেন, বাংলাদেশে সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো মানবসম্পদ। ১৬ কোটির বিশাল জনগোষ্ঠীকে শক্তিতে গড়ে তোলাটা বড় একটা চ্যালেঞ্জ। যা গত ১৪ বছরে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গতিশীল নেতৃত্বে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। দক্ষিণ এশিয়ার বর্ধনশীল অর্থনীতিতে বাংলাদেশে আরও ব্যবসা ও বাণিজ্যের সুযোগ সৃষ্টিতে আবুধাবি সফর করছেন প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা ও আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য সালমান এফ রহমান।
সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশে বিনিয়োগ নিয়ে আলাপ করেন তিনি। আমিরাতে স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানিয়ে সুযোগ নেওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
সরাসরি বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের সাফল্যকে কীভাবে মূল্যায়ন করেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এফডিআই গত অর্থবছরে তিন বছরের উচ্চতায় পৌঁছেছে। যা ভারতের পরে দক্ষিণ এশিয়ার দ্বিতীয় সর্বাধিক পছন্দের গন্তব্যে পরিণত হয়েছে। ইউনাইটেড নেশনস কনফারেন্স অন ট্রেড অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (ইউএনসিটিএডি) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১-২২ অর্থ বছরে এফডিআই বেড়েছে ১৩ শতাংশ। যদিও বাংলাদেশের অর্থনীতি দ্রুত বিকাশে আরও বিনিয়োগের প্রয়োজন মনে করেন সালমান এফ রহমান। এফডিআইয়ের গতি বাড়াতে কী পরিকল্পনা রয়েছে, জানতে চাইলে সালমান এফ রহমান বলেন, বিনিয়োগের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি, বিনোয়োগকারীদের বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন (আরওআই) সম্পর্কে বাস্তব ধারণা এবং এ নিয়ে তাদের যদি কোনও ধরনের উদ্বেগ থাকে তাহলে সমাধান করা হচ্ছে।
প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা বলেন, কাজের একটি ক্ষেত্র হল আমাদের অন্যতম মিত্রদের সঙ্গে কৌশলগত ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এবং আমাদের সব অংশীদারদের জন্য একটি জয় জয় পরিস্থিতি তৈরি করা। তিনি আরও বলেন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যতম বাজারগুলোতে রোডশো শুরু করেছি। এতে সচেতনতা সৃষ্টি হয়েছে পাশাপাশি বিনিয়োগের গতিও বাড়ছে।
বাংলাদেশে সংযুক্ত আরব অমিরাতের উল্লেখযোগ্য বিনিয়োগ নেই, এ পরিস্থিতিতে আগামীতে করণীয় কি? জবাবে বলেন, দেশটির ছোট ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবসার পরিকল্পনা করছে। আরএকে সিরামিকস সংযুক্ত আরব আমিরাতের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান। যা বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছে। এটি দেখিয়েছে কিভাবে বাংলাদেশে বিনিয়োগ করে আরএকে সিরামিকের নিট লাভে অবদান রেখেছে। আমিরাতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নে কিছু উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ঘটছে এবং আপনি সঠিক সময়েই শুনবেন। বাংলাদেশে বিনিয়োগে আমিরাতের কয়েকটি কোম্পানির সঙ্গে আলোচনা চলছে বলেও জানান তিনি।
ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি কীভাবে আরও বৈচিত্র্য আনতে পারে? জবাবে তিনি বলেন, ই কমার্স, স্টার্ট-আপ ইত্যাদির মতো একাধিক নতুন খাতে বিনিয়োগে বৈচিত্র আনা সম্ভব। নতুন নতুন বিনিয়োগ পুঁজিবারে কীভাবে সহায়তা করতে পারে এমন প্রশ্নের উত্তরে বলেন, এই খাতে তার আরও নজর দেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ বাড়াতে দুবাই, সিঙ্গাপুর, লন্ডন, নিউইয়র্ক এবং সান ফ্রান্সিসকোর মতো শহরে একাধিক বিনিয়োগ সম্মেলনের আয়োজন করেছে।
Comments
Post a Comment